অনলাইন ডেস্কঃ দুই সাধ্বীকে ধর্ষণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ডেরা সাচা সৌদা প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিংকে ৩৭৬ ও ৫০৬ ধারায় ১০ বছর করে মোট ২০ বছরের জেলের সাজা দিল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। একটি মামলার সাজা ১০ বছর শেষ হলে ফের পরেরটির ১০ বছরের সাজা শুরু হবে। পাশাপাশি দুটি মামলার সাজা হিসাবে ১৫ লাখ রুপি করে মোট ৩০ লাখ রুপি জরিমানাও হবে। এই টাকা থেকে ১৪ লাখ রুপি করে ধর্ষিতাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
ধর্ষণের অপরাধে ৭ বছর করে জেল, কোনো মহিলার সম্মানহানির অপরাধে ২ বছর করে জেল ও জরিমানা এবং ভয় দেখানোর অপরাধে ১ বছরের জেল মোট এই ১০ বছরের জেলের সাজা ঘোষণা করা হয়।
বাবা রাম রহিমের আইনজীবি জানিয়েছেন, বিশেষ আদালতের এই রায় নিয়ে তারা হাইকোর্টে যাবেন। আদালতে যখন সওয়াল-জবাব চলছিল, সেই সময়েই ফুলকায় দুটি গাড়িতে ও সিরসায় দুটি গাড়িতে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠল গুরমিতের অনুরাগীদের বিরুদ্ধে।
সাজা ঘোষণার পর রীতি মোতাবেক রাম রহিমের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়, চিকিৎসকরা তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় রাজ্যের পুলিশের ডিজি, স্বরাষ্ট্রসচিব ও মুখ্যসচিবকে নিয়ে জরুরী বৈঠকে বসেছেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর।
পূর্ব ঘোষণা মোতাবেক পাঁচকুলা থেকে হেলিকপ্টারে চেপে রোহতকের সুনারিয়ার জেলা সংশোধনাগারে আসেন বিচারক জগদীপ সিং। দুপুর ২.৩০ নাগাদ সওয়াল-জবাব পর্যায় শুরু হয় । এই পর্যায়ে নাটকীয়ভাবে কান্নায় ভেঙে পড়েন ও অশ্রুসজল চোখে বিচারকের কাছে ক্ষমা চাইলেন স্বঘোষিত বাবা রাম রহিম। ‘আমার ভুল হয়েছে, ক্ষমা করে দিন। আমি মানুষের ভালোর জন্য কাজ করি।’ উনি সমাজসেবী সমাজের কল্যাণমূলক অনেক কাজই করেছেন, তাই সাজা ন্যুনতম করার আর্জি ছিল রাম রহিমের আইনজীবির। অন্যদিকে, সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে যাবজ্জীবনের সাজার আর্জি করা হয়েছিল।
স্বঘোষিত ধর্মগুরু দোষী সাব্যস্ত হতেই তাঁর সমর্থকরা যে তাণ্ডব চালিয়েছিল, আজ যাতে তার পুনরাবৃত্তি না হয়, তা নিশ্চিত করতেই তৎপর ছিল খট্টর প্রশাসন। গত তিন দিন ধরে রোহতকের সংশোধনাগারে ১৯৯৭ নম্বর বন্দি রাম রহিমকে রাখা হলেও, প্রশাসনের মূল নজর ছিল পঞ্চকুলা এবং সিরসাতে। কারণ, এই দুই জায়গা থেকেই শুক্রবার ডেরা সমর্থকদের তাণ্ডব ছড়িয়ে পড়েছিল দুই জেলায়। তাই রবিবারও পঞ্চকুলা এবং সিরসায় ১২ কলম সেনা মোতায়েন ছিল। তবে রোহতকে পুলিশ এবং আধা-সামরিক বাহিনীর উপরেই নিরাপত্তার ভার ন্যস্ত রেখেছিল প্রশাসন। রোহতক এবং সিরসা এই দুই শহরেই কার্ফু জারি ছিল। রোহতক যাওয়ার সব রাস্তায় নাকা চেকিং চলেছে।
টপারবিডি/বাংলা ৭৭